সফিউল আলম সফিঃ আক্কেলপুর (জয়পুরহাট)
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে একাধিক মালিকানার পরিচালিত সেচ প্রকল্পের গভীর নলকূপ থেকে গত ৫ মাসে ৪৪ টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের ভিতর থেকে তামার তার চুরির ঘটনা ঘটেছে। যার ক্ষতির পরিমান ৩০ লক্ষ টাকা।
ইরি বোরোর চাষ সহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন ব্যহত হবার শঙ্কা কৃষকদের। ঘটনাটিগুলো উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠ থেকে ঘটছে। সর্ব শেষ ৩টি ট্রান্সফমার চুরি হয়েছে সোনামুখী ইউনিয়নের তাল ঘড়িয়া গ্রামের মাঠ থেকে।
স্থানীয় ও নলকূপ মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে রাতের কোন এক সময় ওই গভীর নলকূপের বৈদ্যুতিক সংযোগের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে ক্রয়কৃত ৩টি ১০ কেভি বৈদ্যুতিক ষ্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমারের ভিতর থেকে তামার তারের কুন্ডলী চুরি হয়ে যায়। সকালে স্থানীয় এক কৃষক মাঠে কাজ করতে গিয়ে চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের বডি. কোর, ইনসুলেটর ,নাটবোল্ড সহ অন্যান্য ভাঙ্গা অংশ বৈদ্যুতিক খুটির নিচে ও পাশের একটি সরিষা ক্ষেতের জমিতে বিক্ষিপ্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে নলকূপের মালিকদের খবর দেয়।
এ ঘটনায় আক্কেলপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে। কৃষকরা বিদ্যুৎ চালিত ওই গভীর নলকূপের পানি দিয়ে আশেপাশের প্রায় ১’শ ৯৫ বিঘা ফসলী জমিতে সেচ দেয়ার মাধ্যমে চাষাবাদ করে থাকেন ।
স্থানীয় বাবু নামের এক কৃষক বলেন, আমার জমিতে ইরি-বোরো রোপনের জন্য সেচ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ার কারণে সেচ দিতে পারছিনা। সঠিক সময়ে ইরির জমিতে সেচ প্রক্রিয়া চালু করতে না পারলে ধান রোপন সহ অন্যান্য ফসলের অনেক ক্ষতি হয়ে কৃষি উৎপাদন ব্যহত হবে।
ওই নলকূপের একাংশের মালিক ছানোয়ার হোসেন নামের এক কৃষক বলেন, এই ঘটনায় আমাদের প্রায় ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। সেচের অভাবে মাঠে ইরি-বোরোর চাষ সহ অন্যান্য ফসলগুলোর উৎপাদন ব্যহত হয়ে অনেক ক্ষতি হবে।
ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় আক্কেলপুর থানায় অভিযোগ হওয়ার বিষয়ে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির আক্কেলপুর জোনার শাখার ডিজিএম আব্দুর রহমান জানিয়েছেন- চলতি মৌসুমে আক্কেলপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠ থেকে কৃষি উৎপাদনের লক্ষে বৈদ্যুতিক সংযোগের ৩৯ টি ও বরেন্দ্র প্রকল্পের আওতাধীন থেকে ৫টি ষ্টেপডাউন ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। প্রতিটি ট্রান্সফরমারের দাম প্রায় ৬৭ হাজার টাকা। সে হিসেবে শুধু ট্রান্সফরমার টাকার পরিমান প্রায় ৩০ লক্ষা টাকা।
এ ছাড়া মাঝে মধ্যে এ সকল থ্রি ফেইজ বৈদ্যুতিক মিটার পর্যন্ত খুলে নিয়ে যাচ্ছে দুর্র্র্বৃত্তরা। চক্রটি মিটার উদ্ধারে ঘটনাস্থলে রেখে যান তাদের মোবাইল ফোন নাস্বার। ওই নস্বরে বিকাশ-এর মাধ্যমে চাহিদার টাকা প্রদান করলে মিটার ফেরৎ পাওযা যায়। প্রতিটি মিটারের দাম ১৩ হাজার টাকা হলেও তাদের কাছ থেকে পণ দিয়ে সে মিটার না নিলে যতবার নতুন মিটার লাগানো হবে ততবারই তারা খুলে নিয়ে যাবে। এ বিষয়ে জয়পুরহাট পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির আক্কেলপুর জোনাল অফিস থেকে বার বার সংযোগকারী গ্রাহকদেরকে প্রতিরোধ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রচারনা করা ।অব্যাহত থাকলেও সঠিক প্রতিকার না থাকায় এ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে দুর্বৃত্ত চক্র।
Leave a Reply