চীন সফরে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি

চীন সফরে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি

সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) আঞ্চলিক সম্মেলনে অংশ নিতে চীন সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১ মে পর্যন্ত চীনের তিয়ানজিন শহরে অনুষ্ঠিতব্য এসসিও সম্মেলনে অংশ নেবেন তিনি। বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় চিরবৈরী দুই প্রতিবেশী ভারত-চীনের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষের পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হয়। নরেন্দ্র মোদির চীন সফরকে এই টানাপড়েন চলাকালীন দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আরেকটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এর আগে, সর্বশেষ ২০১৯ সালে চীন সফর করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে ২০২৪ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় কাজান শহরে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তিনি।

রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রমবর্ধমান চাপ এবং কঠোর শুল্ক আরোপের মাঝে প্রতিবেশী চীন সফরে যাচ্ছেন মোদি। এমন পরিস্থিতিতে চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ভারসাম্যপূর্ণ পুনর্মূল্যায়নকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সম্প্রতি কাশ্মিরের পেহেলগাম হামলা ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধে ইসলামাবাদের প্রতি চীনের প্রকাশ্য সমর্থন দেখা গেছে। তারপরও চীনে এসসিওর আঞ্চলিক সম্মেলনে ভারতের এই অংশগ্রহণকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে।

তবে গত জুনে এসসিওর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানান। ওই বিবৃতিতে ২২ এপ্রিলের পেহেলগামে হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনার উল্লেখ ছিল না। বরং বালুচিস্তানের প্রসঙ্গ টেনে সেখানে ভারতের বিরুদ্ধে অস্থিরতা সৃষ্টির পরোক্ষ অভিযোগ তোলা হয়েছিল বলে জানায় দিল্লি।

পরে গত জুলাইয়ে পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টকে পেহেলগাম হামলায় জড়িত অভিযোগে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপের পর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানের কথা জানিয়ে দেয় চীন।

সেই সময় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেছেন, ‌‌চীন সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে এবং ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানায়। আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা জোরদারে আমরা এই অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই।

এবারের এসসিও সম্মেলনে ১০টি সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে, ভারত-চীন সম্পর্কের স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও সংলাপের পথ উন্মুক্ত করার প্রচেষ্টাও নেওয়া হতে পারে।

সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনাও রয়েছে। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করাই ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত এসসিওর লক্ষ্য। বর্তমানে এই জোটের সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যা ১০। এসব দেশ হলো বেলারুশ, চীন, ভারত, ইরান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, পাকিস্তান, রাশিয়া, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান।

সূত্র: এনডিটিভি, রয়টার্স।

পোষ্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2023 tulshigonga24.com privacy-policy Contact Us About Us
Design BY NewsTheme