অনলাইন ডেস্ক:
ব্যস্ত জীবনযাত্রায় মানসিক চাপ ও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। মাঝে-মধ্যেই অনেকে মাথাব্যথার সমস্যায় ভোগেন। অনেক সময় তীব্র মাথা ব্যাথার সাথে বমি ভাব, চোখে যন্ত্রণা এমনকী মুখ ও চোয়ালেও ব্যথা হতে থাকে। তবে জীবনযাত্রার সামান্য পরিবর্তনই আপনাকে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে যা যা করা প্রয়োজন –
১. চা-কফি পান এড়িয়ে চলুন : মাথাধরা ছাড়াতে আমরা অনেকেই চা-কফির উপর নির্ভর করি। অনেকেরই ধারণা, চা বা কফি মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আসলে, চা-কফিতে থাকা ক্যাফিন স্নায়ুকে উদ্দীপ্ত করে, ফলে ব্যথা কমে গেছে বলে ভ্রান্তি হতে পারে। বরং বেশি মাত্রায় চা-কফির সেবন, শরীরের অন্য জটিলতা বৃদ্ধি করতে পারে।
২. নিরুদ্বেগ বিশ্রাম : মাইগ্রেন অথবা প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা হলে কখনও কাজের মধ্যে থাকবেন না। ঘর অন্ধকার করে চোখ বুজে কিছুক্ষণ বসে বা শুয়ে থাকুন। এই সময় মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করা গেম খেলা অথবা টিভি দেখা এড়িয়ে চলুন। কিছুক্ষণের নিরুদ্বেগ বিশ্রাম, যন্ত্রণা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি দিতে পারে।
৩. উগ্র গন্ধ এড়িয়ে চলুন : তীব্র গন্ধযুক্ত পারফিউম অথবা রুম ফ্রেশনারের উগ্র গন্ধ থেকেও কিন্তু মাথা যন্ত্রণা শুরু হতে পারে। তাই উগ্র গন্ধ যুক্ত যেকোনো পণ্য থেকে দূরে থাকুন। ক্রিম, সাবান, শ্যাম্পুর গন্ধও এড়িয়ে চলা ভালো।
৪. এক্সারসাইজ করুন : এক্সারসাইজ মাইগ্রেনের ব্যথা ও সাধারণ মাথাব্যথা কমাতে পারে। তাই দৈনন্দিন রুটিনে ঘাড়ের ব্যায়াম, অ্যারোবিক, ফ্লেক্সিবিলিটি এক্সারসাইজ, অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করবেন।
৫. কিছু নির্দিষ্ট খাবার এড়িয়ে চলুন : অ্যালকোহল, চকোলেট, চিজ এবং অন্যান্য অনেক খাবার অনেক সময় মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে আপনি যদি জানেন, কোন কোন খাবারে ফলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই সেই সব খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
৬. ধূমপান করবেন না : ধূমপান কেবল ফুসফুসকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না, এটি মাথাব্যথা বাড়াতে পারে এবং অন্যান্য উপসর্গও বাড়াতে পারে।
৭. ঘুমের নির্দিষ্ট সময়সূচি মেনে চলুন : ঘুম আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে এবং হতাশা ও উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে। তবে ঘুমের নির্দিষ্ট কোনো সময় না থাকলে, মাথা যন্ত্রণা এবং মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়তে পারে। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় সূচি মেনে, ঘুমানোর অভ্যাস করুন।
৮. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন : মানসিক চাপ বা স্ট্রেস, মাইগ্রেন এবং মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। তাই মানসিক চাপ যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন, দেখবেন অনেকটা স্বস্তি মিলবে।
৯. সুষম ডায়েট মেইনটেইন করুন : তাজা ফল, শাক-সবজি, গোটা শস্য, প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, মাইগ্রেন এবং সাধারণ মাথাব্যথা প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায়। এছাড়াও, খালিপেটে থাকবেন না। সময়মতো খাওয়ার অভ্যাস করুন। খিদে পেটে থাকলে মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়তে পারে।
১০. শারীরিক ভঙ্গি ঠিক রাখুন : সারাদিন কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সামনে বসে থাকা, আপনার মাথা, ঘাড় এবং কাঁধের পেশীগুলো ওপর ধকল পড়তে পারে, যার ফলে মাইগ্রেন বা মাথাব্যথা হয়। তাই নিজের দিকে খেয়াল রাখুন এবং আপনার শারীরিক ভঙ্গিমা ঠিক রাখুন। মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসুন, কাঁধ ঠিক রাখুন, এরকম কিছু কিছু দিকে নজর দিলে মাইগ্রেন ও মাথাব্যথার সমস্যা কিছুটা হলেও কমতে পারে।
Leave a Reply