সাত মাসে বিএসএফের গুলিতে ২২ বাংলাদেশি নিহত

সাত মাসে বিএসএফের গুলিতে ২২ বাংলাদেশি নিহত

simanto
file photo

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে সাত মাসে প্রাণ গেছে ২২ বাংলাদেশির। আহত হয়েছেন ৩২ জন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসেবে, ২০০৯ সাল থেকে গত ১৬ বছরে বিএসএফ হত্যা করেছে ৬০৭ বাংলাদেশিকে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধে বেসরকারিভাবে দুই দেশ যৌথ কমিশন করতে পারে। তবে রাজনৈতিক সমাধানই প্রধান উপায়। আলোচনায় কাজ না হলে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার পরামর্শ আইনজীবীদের।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি, কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে কাঁটাতারে ঝুলে থাকা ফেলানীর লাশ নাড়িয়ে দিয়েছিলো বিশ্ব বিবেক। তবে বিবেক নড়েনি ভারতের। তোয়াক্কা করেনি কোন নিয়ম-কানুন-আইনের। বন্ধ হয়নি বাংলাদেশি হত্যা। ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত যেন নির্মমতার প্রতীক। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, ২০০৯ থেকে ২৪ পর্যন্ত বিএসএফের গুলিতে প্রাণ গেছে ৬০৭ বাংলাদেশির। আর চলতি বছরের সাত মাসে নিহত হয়েছেন ৩২ জন। এমনকি গেলো বছর কোনো কারণ ছাড়াই বিজিবি সদস্য রইসুদ্দিনকে হত্যা করে নিছক ভুলবশত গুলি চালানোর দায়সারা জবাব দিয়েছে বিএসএফ। ২০২৪ সালে দুই দেশের যৌথ সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামাতে আলোচনা হলেও কার্যকর হয়নি কিছুই। এ অবস্থায় রাজনৈতিক সমাধান, জনমত গঠন ও ভারতের ওপর অব্যাহত চাপ প্রয়োগের পরামর্শ বিশ্লেষকদের। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে আইন-বহির্ভূত হত্যা, আর বিষয়টি ভারতের জনগণকেই বোঝাতে হবে। কারণ যারা নিহত হয়েছেন, তাদের কারও হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না, তারা কোনো অস্ত্র ব্যবহারও করেননি। সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধে একটি স্বাধীন সিভিল কমিশন গঠন করা জরুরি। সরকারি কমিশন হলে সেটি কার্যকর হবে না।’ ভারতের সঙ্গে সরাসরি ৫টি দেশের সীমানা থাকলেও, অন্য দেশের সীমান্তে বাংলাদেশের মতো হত্যার ঘটনা ঘটে না। চীনের সঙ্গে নির্দিষ্ট সীমানায় নিরস্ত্র পাহারার চুক্তি আছে ভারতের। বাংলাদেশও প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার না করার প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে সে প্রস্তাবের অগ্রগতি হয়নি। বর্ডারে হত্যায় সরাসরি মানবাধিকার লঙ্ঘন হলেও বিচার হয়নি। এসব বিষয়ে ভারত একতরফা আক্রমণাত্মক মনোভাব দেখালে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কথা বলছেন আইনজীবীরা।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুক বলেন, ‘এটি বন্ধ করতে হলে বাংলাদেশকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব এবং প্রতিবাদ জানাতে হবে। কূটনৈতিকভাবে যে প্রতিরক্ষা গ্রহণ করা দরকার, সবই নিতে হবে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মহলেও বিষয়টি তুলতে হবে-আর সেই সময়টা এখনই।’ বিচারবহির্ভূত হত্যা ও বল প্রয়োগ বন্ধ করে নিরাপদ সীমান্ত রক্ষায় ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ যৌথ সম্মেলনে আলোচনা হবে বলে আশা বিশ্লেষকদের।

পোষ্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2023 tulshigonga24.com privacy-policy Contact Us About Us
Design BY NewsTheme