গাজা সিটি খালি করতে ফিলিস্তিনিদের জন্য নতুন একটি রুট ৪৮ ঘণ্টার জন্য খুলে দিয়েছে ইসরায়েল। বুধবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, সালাহউদ্দিন সড়ক দিয়ে দক্ষিণে সরে যেতে পারবে বাসিন্দারা। একইদিনে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১৯ জন গাজা সিটিতেই। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েলি ট্যাংক তিন দিক থেকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, অভিযান আরও অন্তত এক থেকে দুই মাস চলবে এবং প্রায় এক লাখ মানুষ নগরীতে থেকে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি হলে অভিযান স্থগিত হতে পারে।
ফিলিস্তিনিদের জন্য পরিস্থিতি এখনও অত্যন্ত ভয়াবহ। আহমেদ নামের এক শিক্ষক বলেন, যদি আমরা নগরী ছাড়ি, ফিরে আসতে পারব, এমন নিশ্চয়তা কোথায়? যুদ্ধ শেষ হবে তো?
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছে। জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়েছে। ইসরায়েল একে অপমানজনক ও মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দোহা সফরে বলেছেন, অত্যন্ত সীমিত সময়ের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সুযোগ রয়েছে। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাস নেতাদের যেকোনও জায়গায় আঘাত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
গাজা সিটিতে এখনও লাখো মানুষ আটকা পড়ে আছেন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, দক্ষিণের তথাকথিত মানবিক জোন-এও নিরাপত্তা নেই। মঙ্গলবার গাজা ছাড়তে গিয়ে এক গাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচজন নিহত হন।
গাজার নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে বুধবারের এক হামলায় একটি বহুতল ভবন ধসে পড়ে। আতঙ্কে আশপাশের বাসিন্দারা পালাতে বাধ্য হন। এদিকে হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজা সরকারের হিসাব অনুযায়ী, গত এক মাসে ইসরায়েল ১ হাজার ৬০০ আবাসিক ভবন ও ১৩ হাজারের বেশি তাঁবু ধ্বংস করেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে অন্তত ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। এরপর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
Leave a Reply