বিয়ের ১৯ দিন পর ময়লার ভাগাড়ে মিলল কলেজছাত্রীর মরদেহ

বিয়ের ১৯ দিন পর ময়লার ভাগাড়ে মিলল কলেজছাত্রীর মরদেহ

অনলাইন ডেস্ক:


কুষ্টিয়ার হাউজিং এলাকার ময়লার ভাগাড় থেকে রেখা (১৮) নামের এক কলেজছাত্রীর কম্বলে মোড়ানো মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে মডেল থানা পুলিশ।

নিহত রেখা কুমারখালী উপজেলার  বাখই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম ব্যাপারীর মেয়ে ও কুমারখালী মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের মাত্র ১৯ দিন পর উত্যক্তকারীরা রেখাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। পুলিশের ধারণা, পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ ফেলে গেছে খুনিরা।

নিহতের পিতা আব্দুর রহিম ব্যাপারী বলেন, ‘রেখা বুধবার সকাল ৯টায় কলেজে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাড়ি ফিরে না যাওয়ায় পরিবারে লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সম্ভাব্য সকল আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যার পর খবর পাই কুষ্টিয়া হাউজিং এর ই-ব্লকের ভাগাড়ে কম্বল মোড়ানো অবস্থায় রেখার মরদেহ পাওয়া গেছে। ১৮ নভেম্বর রেখার পছন্দের পাত্র হাফিজুর রহমানের সাথে তার বিয়ে হয়। কিন্তু এ বিয়েতে আমার বড় জামাই আওলাদ হোসেনের মত ছিল না। তার চরম আপত্তি ও বিরোধিতা সত্ত্বেও পারিবারিক সিদ্ধান্তেই এই বিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আওয়ালাদ খুব রেগে যায়। এমনকি রেখাকে বকাঝকাও করে। এখন কিসের থেকে কী হয়েছে তা আল্লাহ জানে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’

নিহতের স্বামী হাফিজুর রহমান বলেন, প্রায় এক বছর আগে ফোন কলের মাধ্যমে রেখার সাথে আমার পরিচয় হয়। রেখার সাথে ইমো ফোন কলের মাধ্যমে যোগাযোগ হতো। দূরে থাকায় সরাসরি দেখা সাক্ষাতের সুযোগ ছিলনা। কয়েক মাস আগে রেখা জানায়, তাকে বড় দুলা ভাই আওলাদ হোসেন উত্যক্ত করে। বিয়ের জন্য চাপ দেয়। পরে জন্ম নিবন্ধন সূত্রে প্রায় আড়াই মাস বয়স কম থাকলেও কুষ্টিয়াতে নোটারী পাবলিক থেকে পারিবারিক হলফনামা করে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। কিন্তু বিয়ের ১০ দিন পর রেখার বড় দুলাভাই আওলাদ হোসেন আমাদের বিয়ের ঘটনা জেনে যাওয়ার পর থেকেই চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। তিনি রেখাকে নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিতে থাকেন। এ ঘটনায় আগামী সপ্তাহেই রেখাকে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। তার আগেই এ ঘটনা ঘটে গেলো।

তবে অভিযুক্ত আওলাদ হোসেন বলেন, ‘রেখা ফোনে মেহেদী ও হাফিজুরসহ বিভিন্ন ছেলেদের সাথে কথা বলতো বলে আমি রাগারাগি করতাম। তবে ওর বিয়েতে বিরোধিতা করেছি এমন অভিযোগ সঠিক নয়। ওদের বিয়ে কবে হয়েছে তা আমি জানিনা বা আমি সেখানে উপস্থিতও ছিলাম না। রেখা কখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে কলেজে যায় বা বিকেলে বাড়ি ফেরেনি সেই বিষয় আমার জানা ছিলনা। ওই সময় আমি প্রতিদিনের মতো অফিসে ডিউটিতে ছিলাম।

কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) সোহেল রানা বলেন, বুধবার রাতে হাউজিং এলাকায় কম্বল মোড়ানো এক নারীর মরদেহ পড়ে আছে এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় এখনও কেউ অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি। তবে যারাই এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাক তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

পোষ্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2023 tulshigonga24.com privacy-policy Contact Us About Us
Design BY NewsTheme