নিউজ ডেস্ক:
দুই মামলায় ১৪ বছরের জেল হয়েছে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার স্ত্রী বুশরা খানের ১৪ বছরের সাজা হয়েছে। আর গোপন নথি প্রকাশের মামলায় ১০ বছরের সাজা হয়েছে সাবেক ক্রিকেটারের। এই মামলাটিতে ইমরান খানের সঙ্গে সঙ্গে সাজা হয়েছে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীরও।
গত আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন ৭১ বছর বয়সী ইমরান খান। তবে, তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন তিনি। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, সামরিক বাহিনী তার সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করছে।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে যেসবে ফৌজদারি মামলা রয়েছে
গোপন নথি প্রকাশ মামলা
গোপন নথি প্রকাশ (সিক্রেট কেস) মামলায় গত মঙ্গলবার ১০ বছরের সাজা হয়েছে ইমরান খানের। মামলাটি সাইফার কেস নামে পরিচিত। ২০২২ সালে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাকিস্তানি দূতকে অকূটনৈতিক ক্যাবলের মাধ্যমে গোপন বার্তা প্রদান করা হয়। গত বছরের আগস্টে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনে এই মামলা করা হয়। তবে, ইমরান খানের দাবি, গোপন নথি অন্য মাধ্যম হয়ে গণমাধ্যমে এসেছে। একইসঙ্গে অভিযোগটি অস্বীকার করে আসছেন তিনি। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন চালানোর কয়েকদিন আগে মস্কো সফর করেন তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার অভিযোগ, মস্কো সফরের জেরে ইমরান খানের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুতের ষড়যন্ত্র করে সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্র। আর গোপন নথি প্রকাশ তার প্রতিফলন।
রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির মামলা
ইমরান খানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির মামলাটি তোশখানা মামলা নামে পরিচিত। ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ক্ষমতাকালীন সময়ে তিনি রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে উপহার বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই মামলায় গত আগস্টে ইমরান খানের তিন বছরের সাজা হয়। একইসঙ্গে ১৪ কোটি পাকিস্তানি রুপি জরিমানা করা হয়। তবে, রায়ের পরেই এই সাজা বাতিল করে আরেকটি আদালত। তোশখানা মামলায় গতকাল বুধবার ইমরান খান ও তার স্ত্রীকে ১৪ বছরের সাজা দেয় ইসলামাবাদের জবাবদিহিতা আদালত (অ্যাকাউন্টিবিলিটি কোর্ট)।
ভূমি দুর্নীতি মামলা
আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গত বছরের মে মাসে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলাটিতে অভিযোগ করা হয়, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণে ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী তাদের ট্রাস্টের জন্য পাকিস্তানের অন্যতম আবাসন ব্যবসায়ী মালিক রিয়াজের কাছ থেকে ৭০০ কোটি রুপি মূল্যের জমি নিয়েছেন।
কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, আবাসন ব্যবসায়ী থেকে জমি নিয়ে তাকে ব্রিটেনে ১৯ কোটি পাউন্ড (যুক্তরাজ্যের মুদ্রা) পাচারের সুযোগ করে দেয়, যা বিট্রিশ ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) কাছে ধরা পড়ে।
সহিংসতা মামলা
আল কাদরি মামলায় ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পরই তার সমর্থক ও পিটিআই নেতা-কর্মীরা দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করে। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায় তারা। এই সহিংসতাকে উৎসাহিত করার জন্য অ্যান্টি টেরোরিজম অ্যাক্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তবে, অভিযোগটি অস্বীকার করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী জানান, সহিংসতার সময় তিনি পুলিশি হেফাজতে ছিলেন।
সূত্র; রয়টার্স
Leave a Reply