আগামী দিনগুলোতে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রোববার সকালে ক্রেমলিনে দেওয়া এক বক্তব্যে পুতিন এ প্রস্তাব দেন। তবে ইউরোপীয় নেতাদের দেওয়া ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রুশ এ প্রেসিডেন্ট ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে ‘সর্বাত্মক অভিযানে’ নামলে ইউরোপ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় সংঘাত দেখে। ১৯৬২ সালের কিউবান মিসাইল ক্রাইসিসের পর পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে মস্কোর দ্বৈরথ আর কখনো এতটা তীব্রও হয়নি।
তিন বছরের এই যুদ্ধ এরই মধ্যে লাখো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, উদ্বাস্তু করেছে অসংখ্য মানুষকে।
রোববার পুতিন বলেছেন, ইউক্রেইনকে পুনরায় অস্ত্রে সজ্জিত করার লক্ষ্যে সামরিক বিরতি নয়, তিনি ইউক্রেইনের সঙ্গে ইস্তাম্বুলে সরাসরি আলোচনার যে প্রস্তাব দিচ্ছেন, তার লক্ষ্য হচ্ছে ‘সংঘাতের মূল কারণসমূহ দূর করা’ এবং ‘দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা’।
“আমরা প্রস্তাব করছি, কোনো শর্ত ছাড়াই কিইভ যেন ফের সরাসরি আলোচনা শুরু করে। আমরা কিয়েভ কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দিচ্ছি—তারা যেন বৃহস্পতিবারই ইস্তাম্বুলে পুনরায় আলোচনায় বসে,” বলেছেন তিনি।
এ নিয়ে রোববারই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। সরাসরি ওই আলোচনা যুদ্ধবিরতির পথ খুলতে পারে বলেও তার আশা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের চাপ এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর একের পর এক সাবধানবার্তার পরও পুতিন এখন পর্যন্ত ইউক্রেইন সংঘাত বন্ধে খুব বেশি ছাড় দিতে রাজি হচ্ছেন না।
“যেমনটা তারা বলে, আমাদের প্রস্তাব এখন টেবিলে। সিদ্ধান্ত এখন ইউক্রেইনীয় কর্তৃপক্ষ ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের, যারা তাদের জনগণের স্বার্থ নয়, ব্যক্তিগত রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে,” বলেছেন শুক্রবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে পাশে নিয়ে মস্কোর রেড স্কয়ারে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়ের ৮০ বছর উদ্যাপন করা পুতিন।
মস্কোর এ প্রস্তাব নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে রয়টার্স জেলেনস্কির কার্যালয় এবং ইউক্রেইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলেও তাৎক্ষণিকভাবে তাদের দিক থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।
এর আগে শনিবার ফ্রান্স, জার্মানি ও পোল্যান্ডের নেতারা কিইভে একত্রিত হয়ে পুতিনকে ১২ মে থেকে ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে আহ্বান জানায়। এতে সাড়া না দিলে মস্কোর ওপর ‘ব্যাপক’ নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও হুমকি দেয় তারা।
Leave a Reply